মোঃ আফতাব হোসেন, নগরকান্দা (ফরিদপুর)
আসন্ন নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সম্মেলনকে ঘিরে উপজেলার সর্বত্র বিরাজ করছে এক ধরনের উৎসবমুখর পরিবেশ ও উজ্জীবিত হয়েছে বিএনপি নেতা কর্মী। দীর্ঘ ১০ বছর পর সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্দীপনা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। চারপাশে শোভা পাচ্ছে ব্যানার-ফেস্টুন, চলছে মতবিনিময় সভা, উঠান বৈঠক, এবং নেতৃত্ব নির্বাচনে লবিং ও তদবিরের ব্যস্ততা।
বিশেষ করে উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা-কর্মীরা তাদের পছন্দের প্রার্থীদের পক্ষে দৌড়ঝাঁপ শুরু করে দিয়েছেন। অনেকেই দলীয় দফতর কিংবা সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করছেন নেতৃত্বে লাভের আশায়। এই সম্মেলনকে ঘিরে অনেক তরুণ ও নতুন মুখও এগিয়ে আসছেন নেতৃত্বের অংশীদার হতে, যা তৃণমূল পর্যায়ে কর্মীদের মাঝে প্রাণচাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় এক বিএনপি নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “দীর্ঘদিন পর উপজেলা পর্যায়ে সম্মেলন হতে যাচ্ছে। আমরা চাই একটি গণতান্ত্রিক ও অংশগ্রহণমূলক সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ্য নেতৃত্ব নির্বাচিত হোক।”
জেলা বিএনপির নেতারাও সম্মেলন সফল করতে স্থানীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছেন।
তবে নেতৃত্ব নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কেউ কেউ ক্ষোভের সুরেও কথা বলছেন। তাদের মতে, কিছু প্রার্থী ক্ষমতাসীন প্রভাবশালী মহলের আশীর্বাদ পাওয়ার চেষ্টা করছেন, যা দলে বিভক্তি তৈরি করতে পারে। এ বিষয়ে এক সিনিয়র নেতা বলেন, “আমরা চাই সবকিছু দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী হোক। ব্যক্তি কেন্দ্রিক রাজনীতি নয়, আদর্শ ও যোগ্যতার ভিত্তিতেই নেতা নির্বাচিত হওয়া উচিত।”
এদিকে সাধারণ নেতাকর্মীরা জানান, তারা এমন নেতৃত্ব চান যারা শুধু দলের স্বার্থ নয়, জনগণের অধিকার ও স্থানীয় সমস্যাগুলোর প্রতিও আন্তরিক হবেন।
সবমিলিয়ে সম্মেলনকে ঘিরে নগরকান্দা উপজেলায় বিরাজ করছে এক ধরনের রাজনৈতিক প্রাণচাঞ্চল্য ও উদ্দীপনা। সবার প্রত্যাশা, এই সম্মেলনের মাধ্যমে গঠিত হবে একটি শক্তিশালী, গণতান্ত্রিক ও জনবান্ধব উপজেলা বিএনপি কমিটি।
দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর এ কর্মী সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা বিরাজ করছে। বিশেষ করে বিলুপ্ত উপজেলা ও পৌর বিএনপির পুরাতন কমিটির স্থলে নতুন আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে ব্যাপক প্রচার ও পদপ্রত্যাশীদের দৌড়ঝাঁপ।
প্রচার রয়েছে ওই সমাবেশে বিএনপি কেন্দ্রীয় কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক শামা ওবায়েদ ইসলাম রিঙ্কু প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন।
দলীয় একাধিক সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক (সভাপতি) পদে প্রার্থী হিসাবে চারজনের নাম শোনা যাচ্ছে। তারা হলেন— সাবেক সিনিয়র সহ-সভাপতি হাবিবুর রহমান বাবুল তালুকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান মুকুল, সাবেক সহ-সভাপতি মাহবুব আলী মিয়া এবং সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক রফিকুজ্জামান অনু।
সাধারণ সম্পাদক (সদস্য সচিব) পদে তিনজনের নাম আলোচনায় রয়েছে— সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শওকত আলী শরীফ, সাবেক যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক বদরুজ্জামান তারা মোল্লা এবং সাবেক দপ্তর সম্পাদক, মোঃ গোলাম মোস্তফা।
এদিকে পৌর বিএনপির নতুন আহ্বায়ক কমিটিতেও প্রতিযোগিতা তুঙ্গে। আহ্বায়ক পদে জোরেশোরে প্রচার চালাচ্ছেন আলীমুজ্জামান সেলু, আসাদুজ্জামান আসাদ ও হেলালউদ্দিন হেলাল। সাধারণ সম্পাদক পদে লড়ছেন ফকরুজ্জামান ফকো, ইকবাল হোসেন ও আবুল হাসান মুন্সী। যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পদে প্রচারে রয়েছেন মামুন মুন্সী এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে রয়েছে মাহামুদুল হাসান সুজন।